Description
চাপাইনবাবগঞ্জের নয়ানশুকা গ্রামের নয়নতারার মত ফুটফুটে এক শাপলাকলির নাম সানজিদা (৮), বাবা মোঃ আব্দুর রাকিব (৫২) পেশায় ক্ষুদ্র পাদুকা ব্যবসায়ী ছিলেন, ছোট মেয়ে রাবেয়া (৫), এবং স্ত্রী রুমাকে (৩৫) নিয়ে সুখের সংসার গড়েছিলেন। বেশ প্রানবন্ত এবং উচ্ছ্বসিত সুখী পরিবার হিসাবে গ্রামের অনেকেই তাদেরকে জানতো। সানজিদার বাবা বাল্যকালে মেধাবী ছিলেন, কিন্ত অর্থাভাবে লেখাপড়া অগ্রসর করতে পারেন নি, তাই কৈশোরেই সংসারের হাল ধরেন। নিজের আবাদি জমি না থাকায় পৈতৃক ভিটায় বাসস্থানের পাশাপাশি ছোট্ট একটা জুতার দোকান গড়ে তুলেছিলেন। যা দিয়ে টানাপোড়েনের সংসারে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে চলছিলো তাদের। এক আশ্বিনের শেষাংশে সানজিদা ও তার পরিবার অথর্ব হয়ে যায়, নিভে যায় উল্লাসিত সমস্ত পিদিম। সেদিনের বেদনাদায়ক ৭ই অক্টোবরে সানজিদার বাবা পরিবারকে রেখে না ফেরার দেশে চিরকালের জন্য প্রস্থান করেন। হঠাৎ বুকে যন্ত্রণা অনুভূত হলে সানজিদার বাবা স্ত্রী রুমাকে ডাক দেয়, স্ত্রী রুমা হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এসে দেখে সানজিদার বাবা বড় বড় নিশ্বাস নিচ্ছেন। রুমা বেগম কিছু বুঝতে না পেরে সানজিদাকে তড়িঘড়ি করে পানি আনতে পাঠায়, পানি পান শেষে রাকিব উঠে বসেন, কিছুক্ষণ পর ব্যাথা আরও বাড়তে থাকে, এক পর্যায়ে ভীষন ছটফট করতে থাকেন রাকিব, স্ত্রী রুমার দুশ্চিন্তা আরও বেড়ে যায়। পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপের দিকে ধাবিত হয়, শ্বাসকষ্টের মাত্রা অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পেয়ে সমস্ত শরীর ঘামতে থাকে সানজিদার বাবার, যেন জীবনের সাথে লড়াই করার শক্তিটুকু ক্রমশ নেতিয়ে পড়ছে তার, তবে এবার আর তিনি পারলেন না, হঠাৎই হৃদ যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেল তার, স্পন্দন গুলো আর চলমান রইলো না, মৃত্যুর কোলো ঢলে পড়লেন সানজিদার বাবা মো: আব্দুর রাকিব। সকলের কান্না বিজারিত আর্তনাদে মৃত্যুপুরি অনুভূত হলো সানজিদার মায়ের, আকাশ বাতাস ভারী করে সানজিদা ও রাবেয়াকে নিয়ে চোখের জলে চারপাশকে ভারি করে তুললেন রুমা বেগম। এভাবে কেটে যায় কিছুদিন, সকল কিছু থমকে যায় রুমা বেগমের, সানজিদা ও রাবেয়াকে নিয়ে স্বামীর দোকানের সকল মালামাল একবারে বিক্রি করে তা দিয়ে কিছুদিন চলেন রুমা বেগম। এ-সব শেষ হওয়ার কিছুদিন পর আবারও দুই মেয়েকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন তিনি, কি করবেন, কোথায় যাবেন, মেয়েদের মুখে কিভাবে খাবার তুলে দেবেন এসব চিন্তা করে সদা হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন। স্বামীর মৃত্যুর পর সেলাই মেশিনের কাজ শেখেন রুমা বেগম, তা দিয়ে টেনেটুনে সংসার চলে ঠিকই কিন্তু দুবেলা দুমুঠো খাবার জোটেনা সদ্য এতিম হওয়া অনুজদের। জীবনের বাঁকেবাঁকে এখন সুখ দুখের আপেক্ষিক হিসেব কষে সানজিদার মা রুমা বেগম। আমরা পরোপকারী পরিবার সানজিদার দায়িত্ব নিলে কিছুটা দুশ্চিন্তা কাটে রুমা বেগমের, তারপরও তিনি এই অসচ্ছলতাকে পুরোপুরিভাবে কাটিয়ে তুলতে পারছেন না, সানজিদার পরিবারের এই অসচ্ছলতা কাটিয়ে তুলতে আরও সহযোগি প্রসারিত হস্তের প্রয়োজন, পরোপারের পুরুষ্কার সমূহকে আরও বেশী বৃদ্ধিকরণ এবং ত্বরান্বিত করতে নিশ্চয় আপনিও এই সূযোগকে হাতছাড়া করতে চাইবেন না!
Reviews
There are no reviews yet.