তানিশা আক্তার

পরোপকারী মানুষই সেরা মানুষ
৳ 3,000.00

বয়স: ১২ বছর

৭ম শ্রেণি

বাংলাদেশ, চাপাইনবাবগঞ্জ

1 in stock

Description

তানিশা আক্তার

৭ম শ্রেনী

দক্ষিণ ছড়াগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

সকলের আদরের শিরোমণি তানিসা (৮)। দেখতে ছিপছিপে গড়নের। গাঁয়ের মেঠো পথ ধরে ছোট বোন রাইসাকে (৫) নিয়ে হেসে খেলে বেড়ে ওঠা তার। বাবা রাজমিস্ত্রী রেজাউল দিন এনে দিন খেলেও স্ত্রী মৌসুমিকে নিয়ে তার সুখের যেন কমতি নেই। মায়ের বকুনি ও চোখ রাঙানোকে ভয় না পেয়ে সারাদিন বাবার হাত ধরে ঘুরতে পছন্দ করে ছোট্ট তানিসা। এভাবে বেশ কাটছিলো রেজাউলের সংসার। সুখ শান্তি বিরাজমান সংসারে রেজাউলের স্ত্রী মৌসুমির যেন চাঁন্দের হাট। সেদিনের শীতের সকাল, কনকনে বাতাসে জুবুথুবু হয়ে বসে আসে রেজাউল। স্ত্রী মৌসুমি খেয়াল করে রেজাউলের মলিন মুখ, শরীরে হাত দিয়ে দেখে শরীর বেশ শীতল। স্ত্রীকে রেজাউল জানায় তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। অতঃপর স্ত্রী মৌসুমি দুশ্চিন্তায় পড়েন এবং বুকে তেল মালিশ করতে করতে তানিশাকে প্রতিবেশীদের নিকট ডাকতে পাঠান। রেজাউল জানায় তার বুকে প্রদাহ বেড়েই চলেছে, তীব্র যন্ত্রণা ও শ্বাসকষ্ট এড়াতে পারছে না! এবার আরও বেশী ঘামতে থাকেন রেজাউল, জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছেন এবং স্ত্রী মৌসুমি হাতে, পায়ে, বুকে তৈল মালিশ করছেন। অকস্মাৎ রাজমিস্ত্রী রেজাউল ছটফট করে ওঠে যা ক্রমেই বর্ধমান হতে থাকে। একপর্যায়ে রেজাউলের হৃদ স্পন্দন বন্ধ হয়ে যায়, মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে রেজাউল, অবশ নিথর দেহ আকড়ে ধরে কাঁদতে থাকে রেজাউলের পরিবার। ছোট্ট তানিসার আর্তনাদে আকাশ বাতাশ ভারী হয়ে ওঠে, স্ত্রী মৌসুমির ক্রন্দনে যেন এক টুকরো কালবৈশাখী নেমে আসে। রাজমিস্ত্রী রেজাউলের ধরাধাম থেকে প্রস্থানের পর তানিসার পরিবারে নেমে আসে অনাহার ও অনাদর। তানিসার বাবার চাষাবাদের কোন ফসলি জমি ছিলো না, বাপ দাদার সামান্য ভিটায় স্ত্রীকে নিয়ে বসতি গড়ে তুলেছিলেন তিনি। যা তানিসার পরিবারের এখন শেষ সম্বল! কিভাবে চলবে এতিম শিশু তানিসা ও তার ছোটবোন রাইসার লেখাপড়া, কিভাবে তাদের মুখে খাবার তুলে দেবে তানিসার দুখিনী মা? কুল-কিনারাহীণ এই জগতে এখনও এক মুঠো ভাতের জন্য ছোট বোন রাইসাকে নিয়ে অপেক্ষায় থাকে তানিসা ও তার পরিবার। স্বামীর মৃত্যুর পর মৌসুমি তার দুই সন্তানকে নিয়ে উঠেছেন বয়োবৃদ্ধ বাবা-মায়ের সংসারে। তানিসার নানার টানাপোড়েনের সংসারে আগে থেকে লেগে ছিলো দৈনদশা এবং অভাবের লেশ। এভাবে মেয়ের স্থায়ী ভাবে ফিরে আসায় তিনিও এখন দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন। অতঃপর তানিসাকে আমাদের ইয়াতিম প্রতিপালন প্রকল্পের আওতায় এনেছি, এবং সাহায্য সহযোগিতা দিয়ে কিছুটা হলেও তানিসা ও তার পরিবারের মুখে হাসি ফুটানোর প্রচেষ্টা করছি, যা এখনও চলমান। তবে আমাদের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টায় তানিসার পরিবারের সকল সমস্যার সমাধান করা সম্ভবপর হয়ে উঠছে না, এখনও তাদের জীবন চলছে অনাহার এবং অনাদরে, যেন সুখ পাখিটার হঠাৎই ডানা ভেঙ্গে পড়া, কি দূর্দশা, কি নিদারুণ বাস্তবতা, কি নির্মমতা! একটু খাবারের জন্য চাতক পাখির ন্যায় চেয়ে থাকে রেজাউলের দুই মেয়ে তানিসা ও রাইসা, এসবের মধ্যেই সন্তানদেরকে নিয়ে সুখ খুঁজে চলেছে রেজাউলের স্ত্রী মৌসুমি খাতুন। অনেক বড় হতে চাই তানিসা, থমকে যাওয়া পৃথিবীর অর্থ খুজতে চায় সে। খেই হারানো পথের সামান্য পাথেয় দেওয়া আপনার জন্য কি কষ্টসহিষ্ণু হবে? জানি হবে না, বাচ্চা গুলোকে নিজের সন্তান, বোন ভেবে একটু কল্পনা করে উপলব্ধি করে দেখবেন, কিভাবে কাটছে ওদের জরাজীর্ণ জীবন? আসুন না ওদের পাশে দাড়ায়, ওদের মুখে খাবার তুলে দেই। ওদের জন্য কিছু একটা করলে মনের অজান্তেই আপনি হাসতে পারবেন এবং আপনার অজান্তে কি হবে জানেন তো? পথশিশুর ন্যায় ইয়াতিম দুই শিশু আবারও হাসবে, খেলবে, পাখির মত উড়ে আবারও রঙিন জীবন সাজাবে।

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “তানিশা আক্তার”

Your email address will not be published. Required fields are marked *