Description
আসিফা আক্তার মদিনা
চতুর্থ শ্রেণী
ছোটমনি বিদ্যা নিকেতন
ছোট্ট একটি গ্রাম ফতেপুর, সবুজের সমারোহে যেন ছায়াসুনিবিড় শান্তির নীড়। এখানেই স্ত্রী শরিফা খাতুনকে (৩৬) নিয়ে সুখের বসতি গড়ে তোলেন আনোয়ার হোসেন (৪০)। কিছুদিন পর তাদের ঘর আলোকিত করে জন্ম নেই একমাত্র সন্তান আসিফা আক্তার মদিনা (৫)। পরিবারের সকলের ভালোবাসায় সিক্ত হয় আসিফা। পেশায় নিমার্ণ শ্রমিক আনোয়ার হোসেন জীবিকার তাগিদে প্রবাসে পা রাখেন। বিদেশ বিভূঁই পা রেখে কাজও পেয়ে যান দ্রুত। আকাশ সমান স্বপ্ন নিয়ে স্বপ্নবাজ আনোয়ার তার প্রাবাস জীবন শুরু করেছিলেন। সততাকে পুঁজি করে নিষ্ঠাবান বাবার সবকিছু বেশ সুন্দর ভাবে চলতে থাকে। প্রবাসের পরিশ্রমে ধীরেধীরে ঋণের বোঝা কমতে থাকে আসিফার বাবার, একটু একটু করে পরিবারের সখ পূরণ করতে থাকে সে। স্ত্রী শরিফা খাতুন একমাত্র মেয়ে আসিফাকে নিয়ে আশায় বুক বাধে। হঠাৎ একদিন সুউচ্চ ভবন নির্মাণ কালে পা পিছলিয়ে নিচে পড়ে আনোয়ার, এক মুহূর্তে সকল স্বপ্ন বিলীন হয়ে যায় শরিফা খাতুনের। রক্তাক্ত শরীরে মৃতপ্রায় আনোয়ার তার স্ত্রী ও একমাত্র মেয়ে আসিফাকে যেন কল্পনায় দেখতে পায়, পিতৃত্বের অহঙ্কার ফিকে নিরব নিস্তব্ধতায় মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে নির্মাণ শ্রমিক আনোয়ার। স্বামীকে হারিয়ে শোকের সাগরে ভাসছেন আসিফার মা, আজ সকল স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে তার। মাত্র নয় মাস বয়সি আসিফাকে নিয়ে কিভাবে বাকি জীবন পাড়ি দেবেন কিছুই জানেন না আসিফার মা। আনোয়ারের মৃত্যুর পর সেলাই মেশিনকে অবলম্বন করে নিজেকে তৈরি করেন স্ত্রী শরিফা খাতুন আত্মীয় স্বজন বিত্তবান না হওয়ায় সংসারের হালও তিনিই ধরেন। আনোয়ারের মৃত্যুর আট বছর পূর্ণ হবে এই ডিসেম্বরে, তার সাত মাস বয়সি শিশু আসিফাও আজ স্কুলে উঠেছে, খাদ্য বাসস্থানের অভাবে জরাজীর্ণ জীবন এই ছোট্ট সোনামনির। যে বয়স আনন্দ, সুখ, এবং রঙের, সে বয়সে হতাশা, দুঃখ, অনাহার, অনাদরে পার করছে এতিম শিশু আসিফা। সামান্য সেলাই মেশিনের উপার্জনে একমাত্র মেয়ের অনাগত ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত আসিফার দুখিনী মা।
বর্তমানে আমরা আসিফাকে স্পন্সরের আওতায় নিয়েছি, যা দিয়ে তার লেখাপড়া এবং দুমুঠো খাবারের ব্যাবস্থা হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি একদিন আসিফাও বড় হয়ে এতিম, অসহায়, দুস্থ পথশিশুদের পাশে এসে দাড়াবে। আসিফার অনাগত ভবিষ্যতের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সুবিন্যস্ত কল্যাণকামী হস্ত চাই, যাদের সাহায্যে এই এতিম ফুলের ভবিষ্যৎ গড়ে উঠবে অনাবিল সুখ ও অনিন্দ্যে।
Reviews
There are no reviews yet.